ব্রন-মুক্ত ত্বক পেতে স্কিনকেয়ারের সঠিক কৌশল ও সমাধান

পিম্পল বা ব্রণ—শরীরের ছোট্ট একটি সমস্যা হলেও এটি অনেকের জীবনে বড় ধরনের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেকে অসংখ্য স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করেও মুক্তি পান না, বরং ব্রণ দিন দিন বেড়েই চলে। কিন্তু কেন স্কিনকেয়ার করার পরও ব্রণ কমছে না? প্রথমে বুঝতে হবে একনে হওয়ার মূল কারণ।

কারণগুলো আসলে কী?

হরমোনের প্রভাব

টেস্টোস্টেরন হরমোন সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ডকে বেশি সক্রিয় করে, যার ফলে সেবাম বা তেলের নিঃসরণ বেড়ে যায়। অতিরিক্ত সেবাম পোরসে আটকে গেলে তা ইনফ্ল্যামেশন ও ইনফেকশন তৈরি করে, এবং সেখান থেকেই ব্রণ জন্ম নেয়। টেস্টোস্টেরন শুধু পুরুষদের নয়, নারী-পুরুষ সবার শরীরে থাকে। নারীদের ক্ষেত্রে হরমোনাল ইমব্যালেন্স বা PCOS থাকলে এই হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে গিয়ে একনের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া কর্টিসল বা স্ট্রেস হরমোনও সেবাম নিঃসরণ বাড়ায়।

জীবনযাত্রার ধরন

হরমোনাল কারণে যেমন ব্রণ হতে পারে, তেমনই অনিয়মিত জীবনযাপনও এর বড় কারণ। অতিরিক্ত চিনি ও তেলযুক্ত খাবার খাওয়া, পানি কম পান করা, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখা—সবই একনের ঝুঁকি বাড়ায়। অনেকের ক্ষেত্রে জেনেটিক কারণেও প্রাপ্তবয়স্ক বয়সে একনে হতে পারে।

স্কিনকেয়ার করেও ব্রণ না কমলে করণীয়

একনের ধরন বিভিন্ন রকম—Blackheads, Whiteheads, Papule, Pustule ইত্যাদি। স্কিনকেয়ার করার পর ব্রণ সাথে সাথেই চলে যাবে, এই ধারণা ভুল। ব্রণ প্রতিরোধে সঠিক প্রোডাক্ট ব্যবহারের পাশাপাশি জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে।

  • ঘুমানোর সময় বালিশের কভার পরিষ্কার রাখুন।
  • মেকআপ ব্রাশ, মোবাইল কভার, তোয়ালে ও হাতের নখ নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
  • পোরস ডিপলি ক্লিন রাখতে সপ্তাহে ১–২ দিন স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ব্যবহার করুন।
  • হালকা ময়েশ্চারাইজার ও অয়েল-ফ্রি সানস্ক্রিন বেছে নিন।
  • সপ্তাহে ১–২ দিন ক্লে মাস্ক ব্যবহার করে ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমান।
  • স্কিনকেয়ার রুটিন অতিরিক্ত জটিল না করে সিম্পল রাখুন।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন

ব্রণ কেবল টিনএজেই নয়, অনেক সময় ২৫–৩০ কিংবা ৩৫–৫০ বয়সেও দেখা যেতে পারে। সাধারণ টিনএজ একনে অনেক সময় নিজে থেকেই সেরে যায়, কিন্তু সিস্টিক একনে, ফাঙ্গাল একনে বা দীর্ঘদিন ধরে চলা ব্রণ কমাতে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

শেষ কথা

স্কিনকেয়ার করার পরও ব্রণ না কমলে নিজের লাইফস্টাইল ও হরমোন লেভেল পরীক্ষা করে দেখুন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক প্রোডাক্ট নির্বাচন করুন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন। পর্যাপ্ত পানি পান, সুষম খাদ্য গ্রহণ, স্ট্রেস কমানো ও নিয়মিত যত্নই আপনাকে পিম্পল-ফ্রি, স্বাস্থ্যকর ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে সাহায্য করবে।

Scroll to Top